পাক সেনার রাইফেলে বাগবাটি গণহত্যার শিকার ২০০ হিন্দু
–উত্তম মণ্ডল
বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক সেনাবাহিনীর গণহত্যার ঠিকানা পাবনার বাগবাটি।
তারিখ : ১৯৭১-এর ২৭ শে মে।
ফলাফল : রাইফেলের গুলিতে দুশোর বেশি হিন্দুর মৃত্যু।
হামলাকারী : রাজাকার, আল্-বদর, পূর্ব পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি ও পাক সেনা ।
ঘটনার বিবরণ :
পাকিস্তানী সেনাবাহিনী “অপারেশন সার্চলাইট” শুরু করে দখল করে নেয় পূর্ববঙ্গের সিরাজগঞ্জ। এই ঘটনার পর থেকেই আশেপাশের হরিণ গোপাল, পিপলবেড়িয়া ও ধলদেব গ্রাম থেকে কয়েকশো হিন্দু নিরাপত্তার জন্য আশ্রয় নেন বাগবাটি ইউনিয়নের অন্তর্গত বাগবাটি গ্রামে ।
এরপর ১৯৭১-এর ২৬ শে মে রাজাকার ও পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির একটি যৌথ সভা হয় স্থানীয় ঘোড়াছাড়া স্কুলে। বাগবাটি, হরিণগোপাল ও আলোকদিয়া গ্রামের পাঁচশোর বেশি হিন্দুকে হত্যা করা হবে বলে ওই সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ।
পরের দিন ১৯৭১-এর ২৭ শে মে ভোরেই শুরু হয়ে যায় পরিকল্পিত অভিযান। রাজাকার, আল্-বদর, পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সহযোগিতায় পাক হানাদার বাহিনী ঘিরে ফেলে গোটা বাগবাটি গ্রাম। তারপর চলে গুলি।
মৃত্যু হয় বাগবাটি গ্রামসহ আশেপাশের গ্রাম থেকে আশ্রয় নেওয়া প্রায় দুশো হিন্দুর। হত্যার পর আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় গ্রামে এবং সেই সঙ্গে চলে লুঠপাট। এর মধ্যে পাক বাহিনীর হাতে ধর্ষিতা হতে থাকেন গ্রামের মেয়েরা ।
গণহত্যার পরের দিন ১৯৭১-এর ২৮ শে মে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা নিহতদের লাশগুলো বাগবাটি ও ধলদবের পূর্বতন জমিদারদের নির্জন কুয়োয় ফেলে দেন।
এভাবেই সৎকার হয় বাগবাটি গণহত্যার শিকার প্রায় দুশো হিন্দুর ।
